মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী :

রামু’র খুনিয়াপালংয়ে নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা, নৌকার মার্কার এজেন্ট, নৌকার কর্মী ও সমর্থকদের ঘরে ঘরে হামলা, লুটপাট, নৌকার অফিসে যারা অগ্নিসংযোগ করেছেন, তাদের কোন অবস্থাতেই ছাড় দেওয়া হবেনা। যারা নৌকা প্রতীকের অসম্মান করেছেন, তারা যতই শক্তিশালী হোক, তাদের অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে।

সোমবার ১৫ নভেম্বর সংসদ সদস্য আলহাজ্ব সাইমুম সরওয়ার কমল খুনিয়াপালং এর বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন শেষে ধেচুয়াপালং ষ্টেশনে অনুষ্ঠিত এক বিশাল পথসভায় বক্তব্য প্রদানকালে একথা বলেন।

সংসদ সদস্য আলহাজ্ব সাইমুম সরওয়ার কমল খুনিয়াপালং ইউনিয়নের বিভিন্ন ক্ষতিগ্রস্থ বাড়ি-ঘর পরিদর্শন এবং হামলার শিকার নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষের আহাজারির কথা শোনেন।

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য এমপি সাইমুম সরওয়ার কমল আরো বলেন, রামুর অন্য ১০ ইউনিয়নে নির্বাচন পরবর্তী নৃশংস অত্যাচারের অভিযোগ নেই। অথচ খুনিয়াপালং ইউনিয়নে জননেত্রী শেখ হাসিনার নৌকার কর্মীর বাড়িতে হামলা, অত্যচার, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট, স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের অশ্রাব্য ভাষায় গালি, হুমকির কথা শোনে আমি বিস্মিত হয়েছি, তারা এতো সাহস কোথায় পেল? স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পাকিস্তানীরাও এরকম নৃশংস অত্যচার করেনি। যারা নৃশংসতা চালিয়েছে তাদের তালিকা তৈরি করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি বিদ্রোহী প্রার্থী আব্দুল হককে উদ্দেশ্য করে বলেন, এই মুহুর্তে সন্ত্রাসী কার্যক্রম বন্ধ না হলে কারো অবস্থা ভালো হবেনা। শান্ত রামুকে অশান্ত করার চেষ্টা করবেন না। এটা কারো জন্য শুভ হবে না।

এসময় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, রামু থানার অফিসার ইনচার্জ আনোয়ারুল ইসলাম, কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের মহিলা সম্পাদক মুসরাত জাহান মুন্নী, রামু উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও কৃষকলীগ সভাপতি মো. সালাহ উদ্দিন, রামু উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক তপন মল্লিক, যুগ্ম সম্পাদক আবু বক্কর ছিদ্দিক প্রমুখ।

পরিদর্শন কালে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন, জনগণের ভোটে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন শেখ হাসিনার মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী সাংবাদিক আব্দুল মাবুদ। একটি ভোট কেন্দ্রে প্রশাসনিক ক্যু করে বিদ্রোহী প্রার্থীকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছে। তাঁরা বলেন বিদ্রোহী প্রার্থী আব্দুল হক ২০০৮ সাল থেকে সকল জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও বিগত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নৌকা মার্কার বিপক্ষে কাজ করেছেন। তারপরও আব্দুল হককে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি বানিয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগ। নির্বাচন পরবর্তী বিএনপি- জামাতের মদদপুষ্ট আব্দুল হকের সমর্থকরা এ হামলা ও অত্যাচার চালাচ্ছে। আর নেতৃত্ব দিচ্ছে বিএনপি নেতা ফরিদ, বাহাদুরসহ অনেকেই। তাদের হামলায় ইউনিয়নের ৫০টি বাড়িতে হামলা ও লুটপাট এবং অসংখ্য নৌকা প্রতীকের অফিসে অগ্নিসংযোগ ও ভাংচুর চালায়। এ ব্যাপারে তারা প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

প্রসঙ্গত, গত ১১ নভেম্বর অনুষ্ঠিত খুনিয়াপালং ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান আবদুল মাবুদকে মাত্র ৪৮ ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী আবদুল হক কোম্পানি বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।

সাইমুম সরওয়ার কমল এমপি সোমবার সকালে কাউয়ারখোপ ইউনিয়নে নির্বাচনের দিন রাতে সন্ত্রাসী হামলায় আহত কাউয়ারখোপ ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি নুরুল ইসলাম নাহিদকে দেখতে সোমবার ১৫ নভেম্বর সকালে তাঁর বাড়িতে যান।